রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আধুনিক কৃষি উৎপাদনের বিকল্প নেই

রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আধুনিক কৃষি উৎপাদনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। গতকাল রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেম্বার ভবনে আয়োজিত রংপুর বিভাগের বিদ্যমান ব্যবসা-বাণিজ্য পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু।

মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা বর্তমানে ৬০ বিলিয়ন ডলার রফতানি করি। এ রফতানিকে আমাদের ৩০০ বিলিয়ন ডলারে নিতে হবে। রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গার্মেন্টসের বাইরে আমাদের নতুন নতুন পণ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। এজন্য কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

রংপুর অঞ্চল সাময়িকভাবে পিছিয়ে থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে পিছিয়ে নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের যে উন্নয়নযাত্রা, সেই যাত্রায় সরকার রংপুরকেও সহযাত্রী করে নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে রংপুরের ছয় লেনের মহাসড়কসহ ব্যাপক পরিমাণে অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। সরকারের যে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন, সেই স্বপ্নকে সত্যি করার অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এফবিসিসিআই সভাপতি আরো বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পৃথিবীতে একটি নতুন মেরুকরণ হয়েছে। এখন জাপান, কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশগুলো তাদের ব্যবসা চীন থেকে অন্য কোথাও স্থানান্তর করতে চায়। ব্যবসা স্থানান্তরের এ সুযোগটা বাংলাদেশকে নিতে হবে। বিদেশী কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে নিয়ে আসতে হলে আমাদের সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সরকার এরই মধ্যে এজন্য কাজ শুরু করেছে।

চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চালু করতে ব্যবসায়ীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের তরুণরা উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেই তাদের আগ্রহের পেশা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ২০২৬ সালের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় আমাদের শিক্ষা নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।

যেখানে কাঁচামাল আছে সেখানে কারখানা স্থাপন করতে হবে মন্তব্য করে মো. জসিম উদ্দিন জানান, এখন একটি প্রচলিত ধারা হলো রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কাঁচামাল নিয়ে এসে ঢাকায় সেগুলো প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। এর ফলে একদিকে পচনের ফলে যেমন খাবার অপচয় হয়, তেমনি পরিবহন খরচসহ সামগ্রিকভাবে ব্যবসার খরচ বেড়ে যায়। ব্যয় কমাতে প্রচলিত রীতি ভেঙে স্থানীয় পর্যায়ে কারখানা স্থাপন করতে হবে। রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য ঠিক রাখতে ব্যবসায়ীদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে সর্বস্তরের ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।