পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতা হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে লেনদেন

দেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রভাবে গত সপ্তাহে টানা দরপতন হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসে ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানে রয়েছে পুঁজিবাজার। এর মধ্যে গতকাল সূচকের পাশাপাশি লেনদেনেও গতি ফিরেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) গতকাল সূচকের পাশাপাশি দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর পর থেকেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল সূচক। মাঝে কিছুটা পয়েন্ট হারালেও শেষ পর্যন্ত গতকাল দিন শেষে আগের দিনের তুলনায় ৫১ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২২৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স। এর আগের কার্যদিবস শেষে যা ছিল ৬ হাজার ১৭৫ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২১৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের দিন শেষে যা ছিল ২ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে ১০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬১ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১ হাজার ৩৫১ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো লিমিটেড, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস ও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) শেয়ারের।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, গতকাল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনার পাশাপাশি বিক্রিও করেছেন। তবে শেয়ার কেনার চাপ তুলনামূলক বেশি হওয়ায় দিন শেষে ইতিবাচক অবস্থানে ছিল পুঁজিবাজার। ডলার কেনাবেচার ক্ষেত্রে ব্যবধান এক টাকা নির্ধারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগের ফলে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা কমবে বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে আসার খবরেও বিনিয়োগকারী কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে।

ডিএসইতে গতকাল ১ হাজার ৩৪ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল ৬৪৪ কোটি টাকা। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৮১টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ২৩৭টির, কমেছে ৪২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১০২টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২১ দশমিক ৩ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বস্ত্র খাত।   সেবা ও আবাসন খাতে  এদিন সবচেয়ে বেশি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন ছিল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে দশমিক ৩ শতাংশ।

সিএসইর নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ৮৬ পয়েন্ট বেড়ে ১০ হাজার ৯৭২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১০ হাজার ৮৮৬ পয়েন্ট। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ১৪২ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ৩১৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১৮ হাজার ১৭১ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৭৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৬টির, কমেছে ৪২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৮১টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ১৮ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা।